শিক্ষা হবে ধর্মনিরপেক্ষ! সরকারি খরচে কোন অবস্থাতেই আরবি ভাষার শিক্ষাদান করা হবে না। পূর্বেই এই কথা ঘোষণা করেছিলেন অসমের শিক্ষামন্ত্রী ড০ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
আজ বিধানসভায় সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তিনি জানিয়েছেন, আগামি নভেম্বর মাসের ভিতর বন্ধ করে দেয়া হবে রাজ্যের সব সরকারি মাদ্রাসা এবং সংস্কৃত টোল।
ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সরকারি সন্দর্ভে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এবং নভেম্বর মাস থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সমস্ত সরকারি মাদ্রাসা এবং সংস্কৃত টোল।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সরকার ধর্মনিরপেক্ষ সত্তা হওয়ায় এটি ধর্মীয় শিক্ষায় নিয়োজিত সংস্থাকে অর্থায়ন করতে পারে না”।
অসমের অতি প্রভাবশালী বিজেপি নেতা জানিয়েছেন এই কথা।
বিধানসভায় তিনি বলেছেন, “সরকারি টোল হোক বা সরকারি মাদ্রাসাই হোক, আগামি নভেম্বরের ভিতর আমরা সরকারি মাদ্রাসাগুলোকে বন্ধ করতে চলেছি। মাদ্রাসা আর অসমে প্রাদেশীকরণ হবে না। এখন আর আরবী শিক্ষক নিযুক্তি সম্ভব নয়। বেসরকারি মাদ্রাসাগুলো যেভাবে চলছে, চলতে থাকুক, সেখানে আমাদের হস্তক্ষেপ করার কিছুই নেই। কিন্তু সরকার নিরপেক্ষ শিক্ষা দেবে। এই কথাগুলো আমরা আগেই বলেছি। আমরা আধুনিক শিক্ষার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি”।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ, সংস্কৃত ও আরবির মতো ভাষা শিশুদের শেখানো কোনো ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের কাজ নয়।
এবার প্রশ্ন উঠছে, যারা মাদ্রাসায় শিক্ষাদান করে আসছিলেন বছর বছর ধরে, সেই শিক্ষকদের কী হবে? ড০ শর্মা জানিয়েছেন, সেই শিক্ষকদের কাছেরই হাইস্কুলে সংলগ্ন করা হবে, সেখানেই উক্ত শিক্ষকরা শিক্ষাদান করবেন। কিন্তু সরকারি খরচে কোন মাদ্রাসা চলবে না। এর আগেও ড০ শর্মা ক্যাবিনেটে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, আমি হিন্দু, হিন্দু ধর্মের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ। আমি ইসলাম, ইসলামের শিক্ষা নেয়া উচিৎ। এর জন্যে ব্যক্তিগত পর্যায় রয়েছে। সরকারি পর্যায়ে শিক্ষা বা প্রচেষ্টা সেখানে থাকতে পারে না”।
এর আগেও কঠোর ভাবে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, সব সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসা আর সংস্কৃত টোল বন্ধ করে দিয়ে সেগুলিকে হাইস্কুলে পরিণত করা হবে ।
‘আসামের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১৭ সালে মাদ্রাসা ও সংস্কৃত টোল বোর্ড তুলে দিয়ে বোর্ডের অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধিভুক্ত করেছিল; এখন তারা সেগুলোকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। ’
সরকারি মাদ্রাসা বন্ধে বিজেপি সরকারের এ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করছেন অনেকেই। মুসলিমবিদ্বেষী মানসিকতা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
কিন্তু ড০ হিমন্ত বিশ্ব এও বলে দিয়েছেন, যে যেমন সমালোচনাই করুন না কেন, এটি চূড়ান্ত যে মাদ্রাসা আর প্রাদেশীকরণ করা হবে না। এবং সরকারি মাদ্রাসা এবং সংস্কৃত টোল বন্ধ করা হবে।